অপারগতা
“অপারগতা”
দাঁড়ি পাকা বৃদ্ধ লোকগুলো কোমরের ব্যথায় রুকু করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনা, হাঁটু কাঁপা শরীর নিয়ে দীর্ঘক্ষণ সেজদায় থাকে। চেয়ারে বসে হোক দাঁড়িয়ে হোক পূর্ণ তারাবীহ্ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে অত্যন্ত খুশু-খুজুর সাথে।
অক্ষমতা সত্ত্বেও তাঁদের এই নিষ্ঠার কাজগুলো আমাদের অপারগতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা পিছনের কাতারের নামাজীরা ঘড়ি দেখে নামাজে দাঁড়ায়। তারাবীর নামাজে মাঝে মাঝে মোবাইল চেক করে দেখে নিই কোন মেসেজ বা কল এসেছে কিনা। সারাদিনের ব্যস্ততার হিসেব নামাজে মিলিয়ে নিই। আজকের সারাদিনের আয়-ব্যয়, শপিং-এ কোন জিনিস বাদ পড়লো কিনা বা একজনকে বিকাশে টাকা পাঠাতে ভুলে যাওয়া কথা সহ নানাবিধ কথা নামাজে মনে পড়ে যায়।
দিনের বেলার সবজী বিক্রেতা রাতে হয় আল্লাহর নিকটতম বান্দা। সারাদিনের খাটুনি রাতের চোখের পানির তৃপ্তিতে পুষিয়ে নেয়। আমরা মোবাইলে সেহেরীর এলামে কোন প্রকারে উঠে সারাদিন আর কিছু খেতে পারবো না ভেবে যা খায় তখন আর ফজরের নামাজে যাওয়ার ইচ্ছে থাকেনা।
যে রিক্সা চালক রোজা রেখে রিক্সা চালায়, যার রোজার দুর্বলতায় রিক্সার প্যাডেল আর ঘুরতে চাইনা, তখন আমরা তাকে বলি, “রোজা কি তুমি একলা রাখছো। তাড়াতাড়ি চালাও মিয়া ইফতার পার্টিতে দেরী হয়ে যাবে।”
দুপুরের কাহিল শরীর নিয়ে যোহরের নামাজ পড়ে মসজিদে দু’ হাত প্রসারিত করে শুয়ে রোজার ক্লান্তি একটু দূর করে নিই। এসি অফিসে বসে বিকেল তিনটার আগে টেবিলে মাথাটা রেখে আরেকটু ঝিমিয়ে নিই। তারপর তের আইটেমের ইফতারি করে মাগরিব নামাজের জামায়াত মিস করে তাড়াহুড়া করে শপিং-এ বের হই। বাসায় রাত ১২ টায় ফিরে বলি, “ইস!আজকের তারাবীহও মিস হয়ে গেলো”।
আল্লাহ আমাদের অপারগতা-গুলো মাপ করো দাও। আমিন
Leave a Reply